বিদায়ী বছরে ১১টি আইপিও অনুমোদন : শীর্ষে একমি

ipoনিজস্ব প্রতিবেদক :

বিদায়ী বছরে ইনিশিয়াল পাবলিক অফার (আইপিও) ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে কোম্পানিগুলোর মূলধন উত্তোলন কমেছে। সদ্য শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আইপিও মাধ্যমে ১১ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড শেয়ারবাজার থেকে ৮৫৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। অন্যদিকে এ সময় ২ কোম্পানিকে রাইট ছাড়ার অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বাজার পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইপিও ও রাইট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে কিছুটা রক্ষণশীল ভূমিকা নেয়ায় কোম্পানিগুলোর সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের অনুমোদন পায়। এর মধ্যে দুটি মিউচুয়াল ফান্ড। এসব কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড শেয়ারবাজার থেকে ৮৫৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৪ শতাংশ কম। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আইপিওর মাধ্যমে ১৫টি কোম্পানি ও একটি মিউচুয়াল ফান্ড ১ হাজার ৩০৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিল।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ও রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে কোম্পানিগুলোর মূলধন উত্তোলন কমেছে। সদ্য শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আইপিও ও রাইটের মাধ্যমে ১৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড শেয়ারবাজার থেকে মোট ১ হাজার ১৭১ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৫৭ শতাংশ কম।

বিদায়ী অর্থবছরে সবচেয়ে বড় আইপিও ছিল দি একমি ল্যাবরেটিজ লিমিটেডের। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পাঁচ কোটি শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি ৪০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সব মিলিয়ে নয়টি কোম্পানি আইপিওর অনুমোদন পায়, যাদের অর্থ সংগ্রহের মোট পরিমাণ ছিল ৭৬৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে চার কোম্পানি অভিহিত মূল্যে আইপিওতে শেয়ার ছাড়ে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় আইপিও ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির। সে সময় কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ২৩৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। এছাড়া ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, হামিদ ফ্যাব্রিক্স, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস, শাশা ডেনিমস ও আমান ফিড আইপিওতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণের অর্থ সংগ্রহ করে।

রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের পরিমাণও কমেছে। রাইট ইস্যুর ক্ষেত্রে বিএসইসির নতুন শর্তারোপ ও নতুন কোম্পানির জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাইট ইস্যুর আবেদন করতে না পারার নির্দেশনায় এ প্রক্রিয়ায় অর্থ সংগ্রহের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পাঁচ কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। আর সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে মাত্র দুই কোম্পানি রাইট ইস্যুর অনুমোদন পায়, যার মাধ্যমে কোম্পানি দুটি ৩১৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা সংগ্রহ করে।

গত দুই অর্থবছরে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহ করে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি রাইট শেয়ার ইস্যু করে ১ হাজার ৫৪ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে। কোম্পানিটি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রাইট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারে ৪০০ টাকা প্রিমিয়াম নেয়। সে বছর মাইডাস ফিন্যান্স, ডেল্টা স্পিনার্স, বিআইএফসি ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকও রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বাড়ানোর সুযোগ পায়।

তবে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে বেশ কিছু কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যুর আবেদন জানালেও কমিশন এর অনুমোদন দেয়নি। এর মধ্যে নতুন ৩ কোম্পানি রয়েছে, যাদের রাইট ইস্যুর অনুমোদন বাতিল করা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শুধু সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট ও জিপিএইচ ইস্পাতকে রাইট শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেয় বিএসইসি। এর মধ্যে জিপিএইচ ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের জন্য রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২৬১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করে।

এদিকে আইপিও অনুমোদনের পরিমাণ কমে আসায় স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তিও কমেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ২১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত হয়, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১০-এ নেমে আসে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম/এ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *