ফারমার্স ব্যাংকের আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে আগামী ৭ দিনের মধ্যে পরিচালকদের অন্তত ২০০ কোটি টাকার জোগান দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলধন আকারে অথবা আমানত হিসেবে পরিচালকদের এ পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে দিতে হবে। নগদ টাকার চাহিদা পূরণ এবং আমানতকারীদের অর্থ উত্তোলন ঠেকাতে এর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন পর্ষদকে তিন মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের নতুন পর্ষদকে নিয়ে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ফজলে কবির। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাসুদসহ পর্ষদ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে গত সোমবার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতী পদত্যাগের পর এ বৈঠক ডাকা হয়। ব্যাংকটির পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদকে চেয়ারম্যান এবং মারুফ আলমকে ভাইস চেয়ারম্যান করে নতুন পর্ষদ গঠিত হয়েছে।
বৈঠক শেষে ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আতাহার উদ্দিন বলেন, সংকট কাটাতে ফারমার্স ব্যাংককে তিন মাস সময় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি বলেন, নতুন পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বৈঠক ডেকেছিল। আগামীতে তারা ব্যাংকটি কীভাবে চালাবেন সে বিষয়ে আলাপ হয়েছে। কীভাবে ব্যাংক চালাতে চান জানতে চাইলে বলেন, বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। সেটা শিগগিরই পাওয়া যাবে। পরিচালকরা নিজেরাও কিছু টাকা দেবেন।
আতাহার উদ্দিন বলেন, তারল্য সংকট মেটাতে ফারমার্স ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করা হচ্ছে শিগগিরই এ বন্ড ইস্যুর অনুমতি পাওয়া যাবে। নতুন পর্ষদ সংকট কাটানোর চেষ্টা করছে। পদত্যাগকারীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে বর্তমান পর্ষদ কোনো ব্যবস্থা নেবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের নিয়ে বর্তমান পর্ষদের কিছু করার নেই। বর্তমান পর্ষদের সদস্যরা আগের পর্ষদে যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্বের জায়গায় কোনো ঘাটতি হয়নি। দেখেন আমরা কী করি। আমরা কী করতে পারি ভবিষ্যতে সেটা দেখেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ফারমার্স ব্যাংকের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পরিচালকরা এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। নিজেরাও কিছু অর্থ জমা রেখে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, নতুন পর্ষদ সার্বিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে এবং ঋণ আদায় কার্যক্রম আরও বেগবান করবে। একই সঙ্গে ব্যয় সাশ্রয়ী হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, বর্তমান পর্ষদ সঠিকভাবে কার্যক্রম চালালে তারল্য সংকট এবং আর্থিক সূচকের উন্নয়ন করতে পারবে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ